একটি বৃদ্ধের গল্প - পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল
সেই বৃদ্ধ তাঁহার কাকার কাহিনী অনবরত বলিতে থাকিতেন। তিনি
লেখাপড়ায় খুব খারাপ ছিলেন না অথচ তাঁহার সাহস ও শক্তি
নাকি বিস্তর খ্যাতি লাভ করিয়াছিল, একদা চল্লিশটি রুটি ও
আধখানা পাঁঠা খাইয়াছিলেন যখন তাঁহার বয়স মাত্র পনেরো,
মাথায় নারিকেল ভাঙিতেন এবং আটক্রোশ হাঁটিলেও কিছুমাত্র
ক্লান্ত হইতেন না। দেশী আন্দোলন করিতে গিয়া তিনি জমিদার
ও ব্রিটিশ কোর্ট উভয়কেই চটান এবং কোর্টে যখন উপস্থিত হন
তখন তাঁহার সমস্ত পিঠে ব্যাণ্ডেজ। তদবস্থাতেও কোর্ট কুড়ি ঘা
বেত চালাইবার আদেশ দেয় এবং সেই সপ্তদশবর্ষীয় যুবাটির
নিতম্বে ও উরুতে বেত পড়ে। বৃদ্ধ হাসিয়া বলিতেন, তাহা
মাস্টারের বেত নহে।
তাহার পর বৃদ্ধ সেই প্রসঙ্গে আর কিছুই
বলিতেন না। পরে জানিয়াছি তাঁহার সেই কাকার
আঠারো বছর বয়সে বিবাহ হয় এবং তিনি শ্বশুরালয়েই
বেশি সময় থাকিতেন। সেখানে অল্পদিনের মধ্যেই তিনি
স্বীয় স্ত্রী, শ্বশুরালয়ের দুই দাসী, স্ত্রীর জনৈকা বিধবা
মাসির গর্ভ উৎপাদন করেন – যাহার জন্য স্ত্রী আত্মঘাতী
হন, বিধবা কাশী চলিয়া যান, দুই দাসী বেশ্যা হয়। তিনি
মদ ধরেন। কিছুকাল বাদে তিনি আগুনে পুড়িয়া মরিবার
মুহূর্তে একটি শিশুকে উদ্ধার করেন এবং ইহার কয়েকদিন
বাদে অত্যধিক মদপানে মারা যান।
রচনাকাল ১৯৮১
Comments (0)
Leave a reply