কথোপকথন - পুর্ণেন্দু পত্রী
তুমি ফুল ভালোবাসো বলে
তোমাকে ফুলের বৃন্তে মাঙ্গলিক উৎসবরের মতো লাগে বলে
আমাকে ফুলের খুজে যেতে হয় পথ খুঁজে খুঁজে
সিন্ধুনদ, হিন্দুকুশ, হরপ্পার মতো দূরান্তরে।
সেই সব পথে বহু ভাঙ্গাচোড়া বিমান বন্দর
বহু যুদ্ধজাহাজের হাড়গোড়, মেশিনগানের কংকাল কবর,
রুঢ় কলকব্জা - কাঠ - কয়লা - খড়।
সেই সব পথে বহু পতাকার সার কিন্তু প্রাণ চিহ্ন নেই ।
দুরারোগ্য অসুখের শ্বাস কষ্টে বিদীর্ণ বাতাস
এবং পাথরও খুব বড় বড় ডাকাতের মতো পাথর ।
যেতে যেতে রক্তপাত হয়।
যেতে যেতে সর্বাঙ্গে উদ্যমে ও অভিলাষে, বাসনায় বাহুতে বন্কলে
নীল মরচে পড়ে।
অথবা এইভাবে
বৃক্ষের ভাগ্যকে ঈর্ষা করি।
নিজের বেদনা থেকে নিজেই ফোটায় পুস্পদল।
নিজের কস্তুরী গন্ধে নিজেই বিহ্বল।
বিদীর্ণ বল্কলে বাজে বসন্তের বাঁশরী বারংবার
আত্মজ কুসুমগুলি সহস্র চুম্বনচিহ্নে অলংকৃত করে ওষ্ঠতল।
আমি একা ফুটিতে পারি না।
আমি একা ফোটাতে পারি না।
রক্তের বিষাদ থেকে একটি আরক্তিম কুসুমও।
আমাকে বৃক্ষের ভাগ্য তুমি দিতে পারো।
বহুজন্ম বসন্তের অম্লান মঞ্জুরী ফুটে আছো।
নয়নের পথে দীর্ঘ ছায়াময় বনবীথিতল
ওষ্ঠের পল্লব জুড়ে পুস্প বিচ্ছুরন।
আমাকে বৃক্ষের ভাগ্য তুমি দিতে পারো।
তুমি পারো করতলে তুলে নিতে আমার বিষাদ
ভিক্ষাপাত্র ভরে দিতে পারো তুমি অমর সম্ভারে
সর্বাঙ্গ সাজিয়ে আছো চন্দ্রালোকে, চন্দনের ক্ষেত।
আমার উদগত অশ্রু অভ্যথর্না করে নিতে
পারো না কি তোমার উদ্যানে?
মোহিনীরা স্বভাবে নির্মম।
আর যারা ভালোবাসে
তারা শুধু নিজেদের আত্মার ক্রন্দনে ক্লিষ্ট হয়।
Comments (0)
Leave a reply